গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো খাওয়া জরুরি

গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো খাওয়া জরুরি

গর্ভকালীন পুষ্টিকর খাবার


মেয়েদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় নিঃসন্দেহে গর্ভধারণের সময়,মা হওয়ার সময়।নিজের শরীরের ভেতর আরেকটি নতুন জীবনের অস্তিত্ব অনুভব করার যে আনন্দ, যে অনুভূতি তা কেবল মায়ের পক্ষেই অনুধাবন করা সম্ভব।গর্ভাবস্থায় একজন নারীকে খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।গর্ভাবস্থায় মা যা খাবেন তা শিশুর উপর প্রভাব ফেলে।এখান থেকেই শিশুর বুদ্ধিমত্তার বিকাশ শুরু হয়।তাই গর্ভধারনের প্রথম থেকে প্রসব পরবর্তী সময় পর্যন্ত একজন মায়ের দরকার বিশেষ খাবার,বিশেষ যত্ন।



গর্ভবতী হওয়ার পর ৯ মাসে একজন মায়ের ওজন ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত বাড়ে।এটাই স্বাভাবিক।গর্ভস্থ শিশুর বেড়ে উঠার জন্য মাকে দৈনিক ৩০০ ক্যালরি অতিরিক্ত খাবার গ্রহন করতে হবে।এ সময় কী খাবেন আর কী খাবেন না এই নিয়ে প্রায় সব মা ই চিন্তিত থাকেন।তাই আজ আমাদের আলোচনার বিষয় গর্ভাবস্থায় কোন খাবার গুলি খাওয়া জরুরি -


★ক্যালসিয়াম
গর্ভস্থ শিশুর হাড়ের গঠন,মায়ের হাড় ক্ষয়রোধ ও উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধসহ ক্যালসিয়ামের রয়েছে নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবপরবর্তী সময়ে মাকে দৈনিক ১০০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম গ্রহন করতে হবে।দুধ,ডিম,মাছ,পালংশাক,বাদামে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

★কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা
কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা বলতে আমরা মূলত ভাত,রুটি বা আলুকে বুঝি।গর্ভাবস্থায় মাকে সারাদিন অন্তত ৩-৪ কাপ ভাত খেতে হবে । বাড়তি ক্যালরির চাহিদা পূরনে কর্মজীবী মায়েদের অবশ্য ৪-৫ কাপ ভাত খাওয়া আবশ্যক। ভাতের সাথে আলু এবং রুটিও খাওয়া যায়।

★প্রোটিন বা আমিষ
গর্ভস্থ শিশুর শরীরে নতুন টিস্যু তৈরিতে সহায়তা করে আমিষ।গর্ভাবস্থায় মাকে দৈনিক অন্তত ৬০ গ্রাম আমিষ খেতে হবে।এই চাহিদা পূরণে রোজ ২-৩ টুকরা মাছ,৩-৪ টুকরা মাংস এবং একটি ডিম খেতে হবে। তাছাড়া নিয়ম করে প্রতিদিন পর্যাপ্ত দুধ পান করতে হবে।

★ফ্যাট বা চর্বি
গর্ভাবস্থায় ফ্যাট বা চর্বির ও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এ সময় ডায়েট করা মোটেই উচিত নয়।চর্বি জাতীয় খাদ্য শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।তাই মাকে নিয়মিত চর্বিজাতীয় খাদ্য খেতে হবে । দুধ,ঘি,মাখন চর্বির চাহিদা পূরন করে।

★আয়রন
গর্ভবতী মায়েদের জন্য আয়রন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান।গর্ভের শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য আয়রনের ভূমিকা অপরিসীম। আয়রন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।মাকে রোজ ২৭ গ্রাম আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।ডিমের কুসুম,ডাল,কলিজা,মিষ্টিকুমড়া, কচুশাক,কাঁচাকলা ও তরমুজ থেকে আয়রনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

★ভিটামিন -সি
শরীরে আয়রন শোষণ ও পরিপাকে ভিটামিন-সি এর গুরুত্ব অপরিসীম। গর্ভাবস্থায় দৈনিক অন্তত ৭০ গ্রাম ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।এই চাহিদা পূরণে রোজ কমপক্ষে একটি ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উচিত।লেবু,কমলা,পেয়ারা,টমেটো থেকে প্রচুর 

ভিটামিন-সি পাওয়া যায়।

★ফলিক এসিড
শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ফলিক এসিডের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রতিদিন ০.৪ গ্রাম ফলিক এসিড দরকার হয়।লেটুস,পালংশাক  ও কমলালেবুতে যথেষ্ট ফলিক এসিড থাকে।

★পানি
এ সময় মাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে।এছাড়া অন্যান্য তরলজাতীয় খাবার ও অনেক উপকারী।

★ভিটামিন বি-৬
গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাস থেকে বমি বমিবভাব চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়।যা আপনাকে ক্লান্ত করে তোলে খাদ্যে ভিটামিন বি-৬ বমি বমি ভাব হ্রাস করে এবং মেজাজ ভালো রাখে।কাজেই বেশি পরিমাণ টকজাতীয় ফল,ডিম,সবুজ শাকসবজি ও আলু রাখুন আপনার খাদ্য তালিকায়।

★ফল
ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন আছে।তাছাড়া ফল পানি,প্রাকৃতিক সুগার ও ফাইবারের ভালো উৎস।  ভালো স্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি ফল যোগ করুন।

কোন মন্তব্য নেই

enot-poloskun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.