বিয়ের পর বাঙালী নারীদের কেন অতিরিক্ত বয়স্ক দেখায়

বিয়ের পর বাঙালী নারীদের কেন অতিরিক্ত বয়স্ক দেখায়




 কথাটা কেউ স্বীকার করতে না চাইলেও বিয়ের পর বাঙালি নারীকে অতিরিক্ত বয়স্ক দেখায় ব্যপারটি শতভাগ সত্য।একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে অনেক বাঙালি নারীকেই তার বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত বয়স্ক দেখায়।


উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ৪০+ এর পরেও একজন নারী থাকতে পারে আকর্ষণীয়, সেখানে ৪০ মানে আমাদের দেশে মধ্যবয়স্কা।শুধু তাই নয়,অনেক কম বয়সী বিবাহিতা মেয়েদেরকেও তাদের বয়সের তুলনায় অনেক বেশী বয়স্ক দেখায়।কেন?কারন লুকিয়ে আছে আমাদের কিছু ভুলের মাঝে।

নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো।

★অল্প বয়সে অধিক সন্তানের মা হওয়া

আমাদের দেশে খুব অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে এবং বিয়ের পর পরই সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার ব্যপারটি এখনো প্রচলিত।প্রথমত,খুব অল্প বয়সে বিয়েটাই নারী জীবনে হওয়া উচিত নয়।আর বিয়ের পর দ্রুত সন্তানের মা হয়ে যাওয়া বা ঘন ঘন বাচ্চা জন্ম দেওয়া নারীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য নষ্টের জন্য দায়ী। সন্তানধারণ অনেক ধকলের একটা কাজ।অধিক সন্তান হলে তার বিরূপ প্রভাব নারীর দেহে প্রকট  হয়ে দেখা দেয়।

★সন্তান হবার পর নিজের যত্ন না নেয়া

আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে এটি আরও একটি বড় সমস্যা।সন্তান হবার পর খুব অল্পসংখ্যক নারীই নিজের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যচর্চা বজায় রাখেন।সন্তান হবার পর যে বাড়তি ওজন হয়, সেটা ঝরিয়ে ফেলা খুবই জরুরি। না হলে ওজন বাড়তেই থাকে।অন্যদিকে সন্তান হবার সময় ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয় অনেকেরই। সন্তানের যত্ন তো করতেই হবে। কিন্তু নিজের সৌন্দর্যের জন্যও সময় বের করে নিতে হবে।সুষম আহার,ব্যয়াম ও নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চাই বয়স্কভাব ঘুচানোর সমাধান।

★ভুল নাকফুল নির্বাচন

আমাদের সমাজে বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ নাকফুল পরিধান করে থাকেন । কিন্তু ভুল নাকফুল নির্বাচনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নাকফুল বাড়িয়ে তোলে আপনার বয়স।যেমন,যাদের নাক বোঁচা বা একটু মোটা, তারা কখনোই বড় নাকফুল বা নোলক পরিধান করবেন না।নাকফুল যত ছোট হয়,ততই সুন্দর যাদের নাক খুব চিকন, তারাও বড় নাকফুল পরিহার করুন।যত সিম্পল ডিজাইনের নাকফুল,বয়স দেখাবে ততই কম।যত বড় পরবেন,আপনাকে ততটাই বয়স্ক দেখাবে। নাকে একটু ফুটো আসলেই বাড়তি কয়েক বছর যোগ করে দেয় চেহারায়।

★ব্যয়ামের অভ্যাস না থাকা

আমাদের দেশের নারীদের মাঝে ব্যয়ামের
অভ্যাস খুব কম।কিন্তু অল্প বয়স হতেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। ব্যয়াম কেবল দেহের ওজনই ঠিক রাখেনা, পাশাপাশি ত্বককে রাখে টানটান ও যৌবনদীপ্ত।শারিরীক ক্ষমতাও রাখে অটুট।

★অতিরিক্ত গহনা পরা

গহনাপ্রীতি বাঙালি নারীর আছেই।বিয়ের পর এই প্রবণতা  আরও বাড়ে।কিন্তু অতিরিক্ত গহনা পড়ার আগে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত গহনা বয়স্ক দেখানো ছাড়া কিছুই করতে পারবেনা।

★ভুল পোশাক নির্বাচন

বিয়ে এবং কয়েকটি বাচ্চা হওয়ার পর অনেক নারীই আর নিজের পোশাকের দিকে খেয়াল রাখেন না।এটি খুব বড় একটি ভুল।আপনার বয়স যতই হোক না কেন, ওজন যেমনই হোক না কেন, সুন্দরভাবে পোশাক পড়লে সবই দৃষ্টিনন্দন মনে হবে।নিজের দেহের সাথে মানানসই ও রঙের পোশাক নির্বাচন করুন।সুন্দর রঙের পোশাক পরিধান করুন।দেখবেন নিজের কাছেও নিজেকে দেখতে ভালো লাগছে।

★বাজে হেয়ারস্টাইল

চুলের কাট একজন মানুষের বয়সে বিরাট ভূমিকা রাখে।আপনার সন্তান হয়েছে বলেই নিজের চুলগুলো কোনরকম বেণী বা খোঁপা করে ফেলে রাখবেন,এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন।ভালো একটি পার্লারে গিয়ে সুন্দর একটি মানানসই হেয়ারকাট মেইনটেইন করুন।চুলে খুব বেশি রঙ না করিয়ে ন্যাচারাল রঙের কাছাকাছি শেড ব্যবহার করুন।অতিরিক্ত রঙ ব্যবহারেও বয়স্ক দেখায়।

★প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের অভাব

নিজের খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর খুব কম বাঙালি নারীই দিয়ে থাকেন।সঠিক পুষ্টির অভাবে কেবল আপনার সৌন্দর্যই হারিয়ে যায়না,প্রভাব পড়ে আপনার স্বাস্থ্যেও । তাই নিজের জন্য একটি সুষম খাদ্যতালিকা মেইনটেইন করা সব মেয়ের জন্য দরকার।


বয়স শরীরে নয়,বয়স নিজের মনে।নিজের মনের মত করে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন,নিজেকে যত্ন করুন, নিজের খেয়াল রাখুন।বয়সের আগেই বয়স্ক দেখানোর সমস্যা আর থাকবেনা। 

কোন মন্তব্য নেই

enot-poloskun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.